ক্রিকেটে বাবর আজম-মোহাম্মদ রিজওয়ানের দুই জোড়া হাতে যেন পরশপাথর। তারা যা ছুঁচ্ছেন তাই সোনা হয়ে যাচ্ছে। কেননা এই দুই ক্রিকেটার পাকিস্তানের হয়ে একের পর এক জুটির রেকর্ড গড়ছেন । টি-টোয়েন্টিতে প্রথম জুটি হিসেবে ২৭০৮ রান পার করেছেন তারা। এছাড়া এই জুটি ৫৬ ম্যাচে ৫০.১৪ গড়ে রান তুলেছেন। আর সেখানে সেঞ্চুরি পেরিয়েছেন ৯ বার।
ক্রিকেটের এই দুই মানিক জোড়ই ২২ গজ পেরিয়ে একসঙ্গে ভর্তি হয়েছেন আমেরিকার ঐতিহ্যবাহী হার্ভার্ড বিজনেস স্কুলে। আর এখানে পড়তে গিয়েই এমন এক কাজ করেছেন রিজওয়ান যা প্রশংসা কুড়িয়েছে সবার। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটাঙ্গনের প্রথম কোনো খেলোয়াড় হিসেবে বিজনেস অব ইন্টারটেইনমেন্ট, মিডিয়া অ্যান্ড স্পোর্টস (বিইএমএস) বিভাগে ভর্তি হয়েছেন বাবর-রিজওয়ান।
গত ৩১ মে থেকে ৩ জুন পর্যন্ত তাদের ম্যাসাচুসেটসের বোস্টন ক্যাম্পাসে ক্লাস করেছেন তারা। ক্রিকেট মাঠে এ দুজনই তাদের ধারাবাহিক পারফরম্যান্সের কারণে পরিচিত হলেও মাঠের বাইরে মোহাম্মদ রিজওয়ানের আলাদা খ্যাতি আছে ইসলাম প্রচারক হিসেবে। বাইরের দেশে খেলতে গেলে বিভিন্ন মসজিদে বক্তৃতা করতেও দেখা গেছে তাকে।
এবার তার ইসলামের প্রতি তীব্র ভালোবাসা ও অনুরাগের প্রমাণ পাওয়া গেল আরও একবার। হার্ভার্ডে প্রোগ্রামের শেষ দিনে রিজওয়ান তার প্রফেসরকে পবিত্র কুরআন উপহার হিসেবে দিয়েছেন। সেখানকার বিজনেস স্কুলের এক্সিকিউটিভ এডুকেশন বিভাগের শিক্ষককে উপহার দেয়ার মাধ্যমে রিজওয়ান সেখানে পড়ার সুযোগ দেয়ার কৃতজ্ঞতা জানানোর পাশাপাশি ইসলামের প্রতি তার আনুগত্যের প্রমাণ দিয়েছেন বলেও মনে করছেন অনেকে।
এদিকে বাবরের সেখানে পড়তে যাওয়ার প্রভাবও পড়েছে সেখানকার শিক্ষার্থীদের উপর। শেষ দিনে এক নারী শিক্ষার্থী বাবরের সাথে তোলা এক সেলফি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট কর লিখেছেন, ‘এরপরে ক্যারিয়ার হিসেবে আমি ক্রিকেটকেই বেঁছে নিব।’
এদিকে বিশ্বের অন্যতম সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করার সুযোগ পেয়ে এর আগে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছিলেন তারা দুজনই। রিজওয়ান বলেন, ‘মর্যাদাপূর্ণ বৈশ্বিক মঞ্চে পাকিস্তানের প্রতিনিধিত্ব করা অনেক বড় সম্মানের। আগামীতে ক্রিকেটের পরবর্তী সুপারস্টারদের সামনে আমরা আমাদের অভিজ্ঞতা বিনিময় করতে চাই।’
বাবর বলেন, ‘আমি একজন আমৃত্যু শিক্ষার্থী এবং সে ধারাবাহিকতায় উক্ত প্রোগ্রামের বিষয়ে প্রফেসর অ্যালবার্স ও রেহমানির সঙ্গে বিস্তারিত কথা বলেছি। বিশ্বব্যাপী বৃহৎ সম্প্রদায়ের সঙ্গে যুক্ত হওয়া, তাদের গভীরে প্রবেশ, বিশদভাবে জানা, শেখা ও বেড়ে ওঠার বিষয়গুলো বিশ্বসেরা এই প্রোগ্রামে ভর্তি হতে উৎসাহিত করেছে। আমি নিশ্চিত বিইএমএসের দারুণ সব অ্যাথলেট এবং উচ্চমানের কর্মকর্তাদের কাছ থেকে আমরা অনেক বিষয়ে জ্ঞানলাভ করতে পারব।’